মুক্তির
সাল: ২০১৫
পরিচালক: কলিন ট্রেভোরো
ধরন: সায়েন্স ফিকশন, অ্যাডভেঞ্চার
প্লটের
সংক্ষিপ্ত বিবরণ
জুরাসিক
ওয়ার্ল্ড আমাদের নিয়ে যায় সেই জুরাসিক
পার্কের পুনর্গঠিত রূপে, যা এখন একটি
পূর্ণাঙ্গ থিম পার্ক। এখানে
ডাইনোসরদের জিনগতভাবে তৈরি করা হয়েছে,
এবং দর্শকদের বিনোদনের জন্য একের পর
এক নতুন প্রজাতি তৈরি
করা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা শুরু হয় যখন
এক বিশাল, জিনগতভাবে ইঞ্জিনিয়ার করা ডাইনোসর (ইন্ডোমিনাস
রেক্স) তার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে
ফেলে। পার্কে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, আর প্রধান চরিত্র ওয়েন গ্র্যাডি (ক্রিস প্র্যাট) এবং ক্লেয়ার ডিয়ারিং (ব্রাইস ডালাস হাওয়ার্ড) চেষ্টা করেন এই বিপর্যয়
সামাল দিতে।
মুভির
প্রধান আকর্ষণ
- অ্যাকশন ও ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস
মুভিটি ভিজ্যুয়াল দিক থেকে অসাধারণ। ডাইনোসরদের এত বাস্তবসম্মতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যে মনে হয় তারা সত্যি জীবিত। বিশেষ করে ইন্ডোমিনাস রেক্স এবং টি-রেক্সের লড়াইয়ের দৃশ্যগুলো দমবন্ধ করে দেখার মতো। - অভিনয়
ক্রিস প্র্যাট তার স্বাভাবিক ক্যারিশমা এবং হালকা কমেডি দিয়ে মুভির আকর্ষণ আরও বাড়িয়েছেন। ব্রাইস ডালাস হাওয়ার্ডের চরিত্রটি একটু ফরমাল লাগলেও, তার পারফরম্যান্স মুভির দ্বিতীয়ার্ধে প্রাণ পেয়েছে। শিশু চরিত্রগুলোও ভালো অভিনয় করেছে, যা দর্শকের আবেগে সংযোগ তৈরি করে। - সাউন্ডট্র্যাক ও আবহ সঙ্গীত
জন উইলিয়ামসের আইকনিক থিম মিউজিকের সঙ্গে নতুন উপাদান যোগ করে মাইকেল গিয়াচিনো এই মুভির আবহ সঙ্গীতকে অসাধারণ করে তুলেছেন। প্রতিটি দৃশ্যে সঙ্গীত ভয় এবং উত্তেজনার মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।
কিছু
নেতিবাচক দিক
- প্লটের গভীরতার অভাব: গল্পের কিছু অংশ পূর্বানুমেয় এবং গভীরভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি। এটি মূল জুরাসিক পার্ক সিরিজের প্রথম মুভির সঙ্গে তুলনা করলে কম মনে হয়।
- অতিরঞ্জিত বিজ্ঞান: ডাইনোসরদের জিনগত ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে কিছু অংশ বেশ অযৌক্তিক মনে হতে পারে।
চূড়ান্ত
মূল্যায়ন
জুরাসিক
ওয়ার্ল্ড একটি ভিজ্যুয়াল ট্রিট,
বিশেষ করে যারা অ্যাকশন
এবং ডাইনোসর থিম পছন্দ করেন
তাদের জন্য। যদিও এর প্লটে
কিছু ফাঁক-ফোকর আছে,
কিন্তু এটি বিনোদনমূলক এবং
একটি থ্রিলিং অভিজ্ঞতা দেয়। মুভিটি নস্টালজিয়া এবং আধুনিক প্রযুক্তির
সংমিশ্রণে দর্শকদের জুরাসিক পার্কের জগতে ফিরিয়ে নিয়ে
যায়।
রেটিং: 🌟🌟🌟🌟
(৪/৫)
জরাসিক
ওয়ার্ল্ড: কাহিনীর বিস্তারিত বর্ণনা 🦖🎬
মুভিটি
শুরু হয় জুরাসিক ওয়ার্ল্ড নামক এক অত্যাধুনিক
থিম পার্কে, যা ইসলা নুবার দ্বীপে অবস্থিত। এই পার্কে জুরাসিক
যুগের ডাইনোসরদের জীবন্ত রূপে পুনরুদ্ধার করা
হয়েছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে। এটি জুরাসিক পার্ক
সিরিজের পুনর্জন্ম হলেও, পার্কটি এখন পুরোপুরি সক্রিয়
এবং সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত। হাজার
হাজার মানুষ এখানে আসছে ডাইনোসর দেখতে
এবং উপভোগ করতে।
প্রাথমিক
ঘটনা:
পার্কের
অপারেশন ম্যানেজার ক্লেয়ার ডিয়ারিং (ব্রাইস ডালাস হাওয়ার্ড) তার কাজ নিয়ে
ব্যস্ত। এদিকে, তার ভাগ্নে জ্যাচ এবং গ্রে ছুটির জন্য পার্কে আসে।
ক্লেয়ার তাদের জন্য পর্যাপ্ত সময়
দিতে পারে না, তাই
তারা নিজেরাই পার্ক ঘুরে দেখতে শুরু
করে।
পার্কের
মালিকরা দর্শকদের আকৃষ্ট করার জন্য ক্রমাগত
নতুন ও আরো ভয়ঙ্কর
প্রজাতির ডাইনোসর তৈরি করতে চায়।
এর ফলে, বিজ্ঞানীরা ইন্ডোমিনাস রেক্স নামে
এক হাইব্রিড ডাইনোসর তৈরি করে, যা
টি-রেক্সের চেয়েও বড়, শক্তিশালী এবং
ভয়ঙ্কর। ইন্ডোমিনাস রেক্সকে আরও ভয়ঙ্কর করে
তুলতে বিভিন্ন প্রাণীর ডিএনএ যুক্ত করা হয়েছে।
বিপর্যয়ের
শুরু:
ইন্ডোমিনাস
রেক্সকে একটি সুরক্ষিত ঘেরের
ভেতরে রাখা হয়। কিন্তু
এটি খুবই বুদ্ধিমান এবং
তার ঘের থেকে পালিয়ে
যায়। পালানোর পর সে যে
কেবল মানুষদেরই শিকার করে তা নয়,
বরং অন্যান্য ডাইনোসরকেও হত্যা করতে থাকে।
ক্লেয়ার
দ্রুত এই সংকট মোকাবিলার
জন্য ওয়েন গ্র্যাডি (ক্রিস প্র্যাট) নামে এক অভিজ্ঞ
ডাইনোসর ট্রেইনারের সাহায্য চান। ওয়েন তার
দল নিয়ে ইন্ডোমিনাস রেক্সকে
থামানোর চেষ্টা করে। তবে, ইন্ডোমিনাস
এতটাই শক্তিশালী এবং বুদ্ধিমান যে
এটি তাদের প্রতিটি পরিকল্পনাকে পরাস্ত করতে থাকে।
আতঙ্ক
এবং ধ্বংস:
ইন্ডোমিনাস
রেক্স পুরো পার্কে আতঙ্ক
ছড়িয়ে দেয়। গ্রে এবং
জ্যাচ নিজেদের মতো করে ডাইনোসর
থেকে বাঁচার চেষ্টা করে। এদিকে, পার্কের
অন্যান্য ডাইনোসর, যেমন র্যাপ্টর এবং
টি-রেক্স, ইন্ডোমিনাস রেক্সের কর্মকাণ্ডে প্রভাবিত হয়।
এক পর্যায়ে, ইন্ডোমিনাস রেক্স র্যাপ্টরদের নিয়ন্ত্রণ নেয়, কারণ তার ডিএনএর
মধ্যে র্যাপ্টরের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ওয়েন তার প্রশিক্ষিত র্যাপ্টরদের
মাধ্যমে ইন্ডোমিনাসের সঙ্গে লড়াইয়ের চেষ্টা করে।
চূড়ান্ত
লড়াই:
শেষের
দিকে, ক্লেয়ার এক দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত
নেয়। সে টি-রেক্সকে ঘের থেকে বের
করে ইন্ডোমিনাস রেক্সের সঙ্গে লড়াইয়ে নামায়। এটি মুভির সবচেয়ে
উত্তেজনাপূর্ণ অংশ, যেখানে টি-রেক্স এবং র্যাপ্টর মিলে
ইন্ডোমিনাস রেক্সের সঙ্গে লড়াই করে।
শেষমেশ,
ইন্ডোমিনাস রেক্সকে মোসাসরস (জলচর ডাইনোসর) একটি
লেকে টেনে নিয়ে যায়
এবং সেখানে তাকে হত্যা করে।
পার্কটি ধ্বংস হয়ে যায় এবং
বেঁচে থাকা সবাই দ্বীপ
থেকে নিরাপদে পালিয়ে যায়।
শেষ
মন্তব্য:
মুভিটি
শেষ হয় এমন এক
বার্তায় যে, প্রকৃতির সঙ্গে
কৃত্রিমভাবে খেলা করলে তার
ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে। ওয়েন
এবং ক্লেয়ার নিজেদের মধ্যে একটি সম্পর্ক তৈরি
করে এবং বুঝতে পারে
মানুষ বনাম প্রকৃতির লড়াইয়ে
প্রকৃতি সবসময় জয়ী।